Saturday, September 12, 2009

একটি স্মরনীয় ঘটনা

আমি আমার একটি অতি সাম্প্রতিক ঘটনার কথা বলি -
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের দুপুর। ছেলেকে বারান্দায় বসে খাওয়াচ্ছি। একটি পুলিশের গাড়ি নিচে এসে থামল। আমাদের আপ্যার্টমেন্ট-এর পাশেই এস্টেটের অফিস। মাঝে মাঝেই পুলিশ আসে কোনো না কোনো দরকারে। তাই অতটা গা করিনি। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই আমার দরজাতে করাঘাত। এই সময় তো কারোর আসার নয়। কে হতে পারে ভাবতে ভাবতে দারজা খুলে দেখি আমার দারজার সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে।
আমি ত দেখে চমকে উঠেছি। এ কি রে বাবা এখন আবার পুলিশ কেন?
আগের দিনই রাত্রে আমাদের গাড়িটা খানাতে পরে গেছিল। পুলিশ এসে উদ্ধার করে ছিল। তার জন্য ই কি আবার পুলিশ আসলো নাকি? বেশ একটু ভয় পেয়ে গেলাম।
উনি আমাকে বললেন যে এক্ষুনি তো্মার দরকারি জিনিষ নিয়ে আমার সাথে চলে এস। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে বললেন যে "কি কারন এখন বলা যাবে না, যা বলা হচ্ছে তাই কারো তাড়াতাড়ি।"
আমিতো কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। এস্টেট থেকে কোনো নোটিশ আসে নি। আবার টর্নেডো হানা দিচ্ছে না তো। যার জন্য ফ্ল্যাট ছেড়ে নিচে যেতে বলছে। আসে পাশের ফ্ল্যাট'এও দুপুর এর দিকে কেউ থাকে না যে জিগ্যেস করব। সুমন কে ফোন করছি। কিন্তু লাইন পাচ্ছি না। এরই মধ্যে আবার তাড়া "তাড়াতাড়ি করুন"।
আমি ত কোনো রকমে ১০ মাসের ছেলেকে নিয়ে, পাসপোর্ট টা ব্যাগে ঢুকিয়ে হন্তদন্ত হয়ে ওনার সাথে নেমে আসলাম।
নিচে এসে দেখি এক প্রেগনেন্ট ভদ্রমহিলা পাশের ব্লক থেকে হন্তদন্ত হয়ে আসছে। তাকেও পুলিশ ফ্ল্যাট খালি করতে বলেছে, কিন্তু কোনো কারন বলেনি।
যাই হোক পুলিশ এর পিছন পিছন এসে আমরা একটি বাস এ উঠলাম। বাস এ দেখি এস্টেট এর আরো ২/৪ জন বসে আছে। যাক্, দেখে একটু আ‌শ্বস্ত হলাম।
বাস তা যখন এস্টেট থেকে বেরচ্ছে তখন দেখি S.W.A.T. বাহিনি তে পুরো এস্টেট টা ঘিরে ফেলেছে। দেখে মনে হল যেন কোন মুভি দেখছি। ৫ কিমি পর্যন্ত রাস্তা ব্লক করা। কোন গাড়ি চলাচল করছে না। আমাদের বাসটা এর ই মধ্যে দিয়ে এসে একটি কমিউনিটি সেন্টার এর মধ্যে আমাদের নামিয়ে দিল। নেমে দেখি সেখানে এস্টেটের অনেকেই জড়ো হয়েছে। এমন কি স্কুল বাস এসে বাচ্চাদের'ও ওখানে নামিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। এমন কি নিউস চ্যানেল থেকেও সব যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির। সাবার মুখেই দেখি জিজ্ঞাসা। কি হয়েছে?
ওখানে গিয়ে দেখি সুমন দাঁড়িয়ে আছে। এস্টেট থেকে ওকে ফোন কোরেছে ওই কমিউনিটি সেন্টার এ চলে আসার জন্য। এবার আমি নিশ্চিন্ত।
এই ভাবেই চল্ল প্রায় ঘন্টা তিনেক।
টিভি ক্রিউ দের কাছে জানতে পারলাম যে এক প্রাক্তন পুলিশ তার স্ত্রীর সাথে মারপিট করে এসে আরমস নিয়ে এস্টেটে লুকিয়ে ছিল। যেহেতু সে পুলিশ কর্মী ছিল তাই সে সমস্ত টেকনিক জানে। যাতে সে কাউকে হোস্ট না করে ফেলে তাই এত সতর্কতা। তাকে ধরার জন্যই তাই ছিল এত আয়জন।
এর পর দেখি S.W.A.T বাহিনি চলে গেল। পুলিশ রাস্তা খুলে দিল। আমরা এবার সবাই এক এক করে ঘরে ফিরে এলাম।
সন্ধ্যে বেলা ই-পেপারে দেখলাম যে লোকটি নিজে কে স্ট্যাব করেছিল।
এখান কার পুলিশ এর এই রকম সতর্কতা সত্যি আজও আমার কাছে স্মরনীয় ...



আমি দেবারতি। আমি একজন গৃহবধু। স্বামী্র কর্মসূ্ত্রে আপাতত প্রবাসে।